শবে মেরাজ ২০২৪ কত তারিখে
মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি বেশ কিছু দিবস বা রজনী রয়েছে যার মধ্যে শবে মেরাজ অন্যতম। শবে মেরাজ ২০২৪ কত তারিখে বা কোন মাসে পালিত হবে তা আগে থেকে বলা যায় না কারন ইসলামের সকল ধর্মীয় দিবসগুলো মূলত হিজরি সনের তারিখ বা চন্দ্র বর্ষের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী হয়ে থাকে। ২০২৪ সালের রমজান, শবে বরাত বা লাইলাতুল বরাত, শবে কদর বা লাইলাতুল কদর, শবে মেরাজ, আশুরা, ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ, ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ কবে বা কোন মাসের কত তারিখে তা আগে থেকে নির্ধারণ করা কিছুটা মুশকিল। শবে মেরাজ ২০২৪ কত তারিখে বা কোন মাসের কত তারিখে পালিত হবে তা জানতে আমাদের হিজরি ১৪৪৫ সনের রমজান ২০২৪ কবে নির্ধারণ হয়েছে তা খুজতে হবে।
আমরা জানি, হিজরি সনের ক্যালেন্ডার বা চন্দ্র মাসের বর্ষপঞ্জি আগে থেকেই নির্ধারণ করা যায় না কারন, চন্দ্র মাসগুলো ২৯ বা ৩০ দিনের হয়ে থাকে এবং নতুন চাঁদের উদিত হওয়ার প্রেক্ষিতে পরবর্তী মাসের গণনা শুরু হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক স্থানের সাথে অন্য স্থানের তারিখেরও তারতম্য হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে, রোজা কিংবা ঈদ পালনে রয়েছে পবিত্র হাদিসের নির্দেশনা। তবে, বর্তমানে বিজ্ঞানের উন্নতিতে জ্যোতি শাস্ত্রের প্রসারের ফলে আগে থেকেই চন্দ্র মাসের তারিখ নির্ধারণ বা কবে চাঁদের উদয়ন কিংবা নতুন মাস কবে শুরু হচ্ছে তা জানা সম্ভব হচ্ছে। জ্যোতি শাস্ত্রের প্রযুক্তি ব্যবহারে মানুষ এখন পরবর্তী ৫/৬ বছরের চন্দ্র মাসের হিসেবও আগে থেকে জেনে জাচ্চে।
শবে মেরাজ ২০২৪ কত তারিখে
শবে মেরাজ ২০২৪ কত তারিখে তা জানতে আমাদের জানতে হবে শবে মেরাজ হিজরি সনের কোন মাসে হয়ে থাকে। আমরা জানি, হিজরি সনের রজব মাসের ২৭ তারিখ দিবাগত রাতে মুসলমানদের নিকট আতি পবিত্র রজনী শবে মেরাজ উদযাপিত হয়ে থাকে। যদিও, বিভিন্ন ফেকাহ বা মতাবলম্বীদের মধ্যে পবিত্র এই রজনী শবে মেরাজের তারিখ নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কারন এই মেরাজের ঘটনা নিয়ে হাদিসে বিভিন্ন বর্ণনা থাকলেও কবে এটি সংঘটিত হয়েছে তার বর্ণনা তেমন একটা পাওয়া যায় না। মূলতঃ তাই নিয়েই মতভেদ সৃষ্টি। তবে, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন ও প্রিয় নবীজির বর্ণনা মোতাবেক হাদিস অনুযায়ী মেরাজের ঘটনা সত্য এবং তা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই।
২০২৪ সালের শবে মেরাজ / 2024 সালের শবে বরাত কবে
২০২৪ সালের হিজরি ক্যালেন্ডার মোতাবেক ১৬ জুলাই ২০২৩ তারিখে হিজরি ১৪৪৫ সনের শুরু। সে হিসেবে এবং চাঁদের উদয়ন মোতাবেক বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশের দেশগুলতে ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ মাসে শুরু হয় পবিত্র রজব মাস। রজব মাসের ২৭ তারিখ দিবাগত রজনীতে পালিত হয় পবিত্র শবে মেরাজ। সুতরাং বাংলাদেশে ২০২৪ সালের শবে মেরাজ পালিত হবে ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ দিবাগত রাত বা শনিবার।
শবে মেরাজ কি? শবে মেরাজ কবে সংঘটিত হয়?
আরবি শব্দ শব আর্থ রজনী আর মেরাজ শব্দের অর্থ দেখা বা সাক্ষাত। সুতরাং শবে মেরাজ অর্থ হলো সাক্ষাতের রজনী। ইসলামিক পারিভাষিক অর্থে শবে মেরাজ হলো ঐ রজনী যে রাতে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সঃ পবিত্র নগরী মক্কার কাবা গৃহ হতে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত এবং বায়তুল মুকাদ্দাস হতে প্রথম আসমান ও পরবর্তীতে আরশে আজীমে গমন করেন, যেখানে মহান আল্লাহ সুবহানাহুর সাক্ষাৎ লাভ করতঃ বেহেশত, দোজখ ও বিভিন্ন নির্দেশনার দর্শন লাভ করেন। বিভিন্ন দিক নির্দেশনার পাশাপাশি প্রিয় নবী আমাদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মত একটি নেয়ামত নিয়ে আসেন।
শবে মেরাজ কবে ২০২৪ বাংলাদেশ
সরকারি ছুটির তালিকা ২০২৪ ও ২০২৪ সালের সরকারি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০২৪ সালের শবে মেরাজ পালিত হবে ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ দিবাগত রাতে অর্থাৎ শুক্রবার দিনগত রাতে বা শনিবার। যদিও, শবে মেরাজ উদযাপন বা পালন করা সম্পর্কীয় কোনো নির্দেশনা কোরআন কিংবা হাদিসে উল্লেখ না থাকলেও বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান অঞ্চলের কিছু কিছু মুসলিম সম্প্রদায় দিবসটিকে পালন করে থাকে।
শবে মেরাজ ২০২৪ এর ছুটি কবে
প্রকাশিত সরকারি বর্ষপঞ্জি, সরকারি ছুটির তালিকা এবং স্কুল-কলেজের ছুটির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী বাংলাদেশে ৯ ফেব্রুয়ারি রোজ শুক্রবার দিবাগত রাতে পালিত হবে শবে মেরাজ ২০২৪। যেহেতু, হিজরি সনের তারিখ গণনা শুরু হয় চাঁদের উদিত হওয়ার ক্ষণ হতে তাই বাংলদেশে শবে মেরাজের ছুটির দিন পড়েছে শনিবার। শনিবার সরকারি বা সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় শবে মেরাজ ২০২৪ এর জন্য আলাদাভাবে কোন ছুটি উপভোগ করার সুযোগ নেই। যদিও, শবে মেরাজের ছুটি মুসলিম পর্বের ঐচ্ছিক ছুটি হিসেবে রয়েছে।
শেষকথা
শবে মেরাজ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সঃ এর নব্যুয়তি জীবনে একটি শ্রেষ্ঠ ঘটনা ও মোজেজা। প্রিয় নবীর সাথে মহান আল্লাহর সাক্ষাৎ সত্য যা নিয়ে কোন দ্বিমত বা মতানৈক্য নেই। যদিও দিবস পালন ও এই দিবসের আমল বা ফজিলত নিয়ে রয়েছে অনেক মতানৈক্য। কেউ কেউ এই রজনীতে নফল ইবাদত হিসেবে নামাজ, তসবিহ পাঠ, কোরআন তেলায়ত ছাড়াও দিবসে রোজা পালন করে থাকে। শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম, নিয়ত, কয় রাকাত ও রোজা কয়টি পালন করতে হবে বা হাদিসে এই বিষয়ে কি নির্দেশনা রয়েছে তা নিয়ে আমাদের আয়োজন পড়ার আমন্ত্রণ রইলো।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.